গত ১ এপ্রিল কুষ্টিয়ার খোকসায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। ওই ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত আফজাল কাজী নামে পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে আগুনে ভস্মীভূত করা হয় শিশুটির পরিবারের একমাত্র বসতঘরটি। এ ঘটনায় শিশুটির পরিবার ও স্থানীয়রা অভিযুক্ত আফজাল কাজীর পরিবারকে দায়ী করলেও সন্দেহজনকভাবে একজনকে আটকও করেছে। নতুন করে আরও একটি মামলাও হয়েছে খোকসা থানায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার গভীর রাতে আকস্মিক আগুনে ভস্মীভূত হয় কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নের খদ্দোসাধুয়া গ্রামের ধর্ষিতা শিশু ও তার পরিবারের মাথাগোঁজার একমাত্র টিনের ছাপড়া ঘর। ঘুমন্ত গ্রামবাসীদের এগিয়ে আসার আগে ভস্ম হয় বসতঘরটি। এ সময় শিশুটি ও তার মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা ছিলেন অন্যত্র।
ধর্ষণের শিকার শিশুটির দাদি জানান, রাতে তারা সবাই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। পাশের বাড়ির অনুষ্ঠানের লোকজন দূর থেকে আগুন দেখে চিৎকার করে। এ সময় গ্রামের মানুষ এগিয়ে আসার আগেই সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তিনি জানান, তার ৮ বছরের নাতিতে নির্যাতন করা হয়েছে। এ নিয়ে মামলা হয়েছে। ওই মামলার একমাত্র আসামি আফজাল কাজীর লোকজন আগুন দিতে পারে।
শিশুটির চাচা বলেন, কয়েকদিন ব্যস্ত থাকায় শুক্রবার সন্ধ্যা রাতেই ঘুমিয়ে পড়েন। পরে লোকজনের চিৎকারে তিনি জেগে দেখেন তার ভাইয়ের বসতঘরের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।
গোপগ্রাম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর সোবহান আলী জানান, কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তাছাড়া ওই বাড়িতে গভীর রাতে আগুন লাগবে কি করে। তিনি এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার বিচার দাবি করেন।
ঘটনা স্থলে দায়িত্ব রত পুলিশের এসআই তারিকুল ইসলাম বলেন, তারা এলাকায় শান্তিরক্ষায় কাজ করছেন। এ ব্যাপারে একজন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
খোকসা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ নাঈমুল ইসলাম বলেন, শিশু ধর্ষণের ঘটনা শোনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত আফজাল কাজীকে খোকসা রেল ষ্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়েছে। হঠাৎ করে শিশুটির বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে শোনা মাত্র সেখানে গিয়ে তারেক কাজী নামের এক সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় আলাদা মামলা রেকর্ড করে তদন্ত করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে খোকসা উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নের খদ্দোসাধুয়া গ্রামের আফজাল কাজী নামে পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তি ৮ বছরের শিশুকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে পথিমধ্যে রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে ধর্ষণ করে। পরে তাকে (শিশুকে) নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায় ধর্ষক আফজাল নিজে। পরদিন বুধবার দুপুরে শিশুটি পেটের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর ধর্ষণের ঘটনা বেরিয়ে আসে। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতেই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ধর্ষক আফজাল কাজীর বাড়ি ঘেরাও করে। পরে খোকসা থানা পুলিশ ওই ধর্ষকে গ্রেপ্তার করে।