৭৬ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ ৪৭তম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে বলে একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সয়লাব হয়েছে। বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার মাত্র ৮ মাসে বাংলাদেশকে ৪৭তম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। অন্য আরেকটি দাবিতে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ আগে এই র্যাঙ্কিংয়ে ৪০তম ছিল, আট মাসে সাত ধাপ পিছিয়ে এখন ৪৭তম হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই দুটো দাবিই ভুয়া।
ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই তালিকাটি এ বছরই প্রকাশ হয়নি। তালিকাটি প্রকাশিত হয়েছে ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। এই র্যাঙ্কিংয়ের জরিপ হয়েছে ২০২৪ সালের ২২ মার্চ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত।অর্থাৎ, সবশেষ যে র্যাঙ্কিং ইউএস নিউজের ওয়েবসাইটে রয়েছে, তা বাংলাদেশের বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে হওয়া জরিপের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত হয়।
মূলত, ২০২৫ সালের র্যাঙ্কিং এখনও প্রকাশই করেনি ইউএস নিউজ। নিয়ম অনুযায়ী তা চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রকাশিত হবে।
দাবি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১২৩তম স্থান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে এগিয়ে বর্তমানে ৪৭তম অবস্থানে এসেছে বলে বলা হলেও ওয়েবসাইটটির আর্কাইভ বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার দেখতে পায়, বাংলাদেশ এই র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয় ২০২২ সালে। ওই বছর থেকে পরবর্তী সময়গুলোতে র্যাঙ্কিংয়ে অন্তর্ভুক্ত দেশের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে: ২০২২ সালে ৮৫টি, ২০২৩ সালে ৮৭টি এবং ২০২৪ সালে ৮৯টি। এ পর্যন্ত কোনো বছরেই র্যাঙ্কিংয়ে ১২৩টি দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, ফলে বাংলাদেশের কখনো ১২৩তম অবস্থানে থাকার দাবি বাস্তবসম্মত নয়।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের এই র্যাঙ্কিং নিয়ে হঠাৎ আলোচনা শুরুর প্রেক্ষাপটও জানার চেষ্টা করেছে রিউমর স্ক্যানার। গত ১০ ফেব্রুয়ারি এশিয়ান সি স্টোরি নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে ইউএস নিউজকে সূত্র দেখিয়ে শিরোনামে ২০২৫ সালের র্যাঙ্কিং দাবি করে এ সংক্রান্ত প্রথম পোস্টটি করা হয় বলে প্রতীয়মান হয়। এরপর গ্লোবাল স্ট্যাটিসটিকস নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে রোববার (৬ এপ্রিল) রাতে একই পোস্ট করা পরই বিষয়টি আলোচনায় আসে।
অর্থাৎ, অন্তবর্তী সরকারের ৮ মাসে ৪৭তম হওয়া কিংবা ৮ মাসে ৭ পিছিয়ে ৪৭তম হওয়া সংক্রান্ত দুটো দাবিই ভুয়া। সেই সঙ্গে গত বছর বাংলাদেশ ১২৩তম স্থানে ছিল সেই দাবিটিও বানোয়াট এবং অসত্য।