সম্প্রতি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির জনসভায় ছাত্রশিবিরের সদস্য অস্ত্রসহ মিছিলে অবস্থান করলে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির জনসভায়, ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসীরা, সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালানোর জন্য অস্ত্রসহ মিছিলে অবস্থান করে, সাথে সাথে বিএনপির যুবদল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরে, পুলিশে খবর দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।’
এক প্রতিবেদনে রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির জনসভার মিছিল থেকে ছাত্রশিবির সদস্যের অস্ত্রসহ আটক হওয়ার দাবিটি সত্য নয়। বরং, গত ২২ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইসলামী বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারির মাহফিল এলাকা থেকে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা ‘আলোকিত গৌড়’ লেখার সূত্র ধরে স্থানীয় গণমাধ্যম ‘আলোকিত গৌড়-Alokito gour’ নামক ফেসবুক পেজে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল এলাকায় সন্দেহভাজন এক কিশোর আটক’ শীর্ষক শিরোনামে আপলোডকৃত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে উল্লেখ করা হয়, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল এলাকায় অস্ত্রসহ এক ব্যক্তি আটক। বরেণ্য ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজহারির মাহফিল এলাকায় সন্দেহভাজন এক যুবককে অস্ত্রসহ আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার ২২ ফ্রেব্রুয়ারি দুপুর পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঘোড়াস্ট্যান্ড এলাকায় তাকে আটক করা হয়।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা ‘আলোকিত গৌড়’ লেখার সূত্র ধরে স্থানীয় গণমাধ্যম ‘আলোকিত গৌড়-Alokito gour’ নামক ফেসবুক পেজে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল এলাকায় সন্দেহভাজন এক কিশোর আটক’ শীর্ষক শিরোনামে আপলোডকৃত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে উল্লেখ করা হয়, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল এলাকায় অস্ত্রসহ এক ব্যক্তি আটক। বরেণ্য ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজহারির মাহফিল এলাকায় সন্দেহভাজন এক যুবককে অস্ত্রসহ আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার ২২ ফ্রেব্রুয়ারি দুপুর পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঘোড়াস্ট্যান্ড এলাকায় তাকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ওই যুবক একটি সাইকেলে করে মাহফিলের দিকে যাচ্ছিলেন। সন্দেহজনক আচরণের কারণে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা তাকে থামিয়ে তল্লাশি চালায় এবং তার কাছ থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃত ব্যক্তির পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
ভিডিওটির পোস্টের ক্যাপশন কয়েকবার এডিট করা হয়। তবে, এডিট হিস্ট্রি পর্যবেক্ষণ করে ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির জনসভায় ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালানোর জন্য অস্ত্র সহ মিছিলে অবস্থান করে সাথে সাথে বিএনপির যুবদল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরে পুলিশে খবর দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়’ শীর্ষক দাবির উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও, পেজটিতে একই বিষয়ে আরও একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বার্তা২৪ এর ওয়েবসাইটে গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ‘আজহারির মাহফিলে অস্ত্রসহ আটক ১’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইসলামি আলোচক মিজানুর রহমান আজহারির মাহফিল এলাকায় সন্দেহভাজন এক যুবককে অস্ত্রসহ আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহারাজপুর ইউনিয়নের ঘোড়াস্ট্যান্ড এলাকায় তাকে আটক করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবক একটি সাইকেলে করে মাহফিলের দিকে যাচ্ছিলেন। সন্দেহজনক আচরণের কারণে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা তাকে থামিয়ে তল্লাশি চালায়। এসময় তার কাছ থেকে একটি অস্ত্র (রাইফেল) উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানান, আটককৃত ব্যক্তির পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে গত ২২ ফেব্রয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইসলামি বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল এলাকা থেকে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
তাছাড়া, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ হয় গত ২৫ ফেব্রয়ারি। যেখানে আলোচিত ভিডিওটি তার দুইদিন আগ থেকে অর্থাৎ ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে।
সুতরাং, চাঁপাইনবাবগঞ্জে মিজানুর রহমান আজহারির মাহফিল এলাকা থেকে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তির আটক হওয়ার ঘটনাকে বিএনপির জনসভার মিছিল থেকে ছাত্রশিবির সদস্যকে অস্ত্রসহ আটক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।