বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অব্নতি এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর গুরুতর আঘাত হানছে, এমন চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কভিত্তিক এই সংস্থা জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার ‘মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করছে’ এবং অপসারিত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর গুরুতর আঘাত হানছে।
২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে বাংলাদেশ রাজনৈতিক টানাপোড়েনে রয়েছে। সড়কে সড়কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিবাদ চলতে থাকে। সংবাদ সংস্থা এএফপির বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে দ্য ডন।
বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সতর্ক করে বলেছে, ইউনুসও তার পূর্বসূরি শেখ হাসিনার পথ অনুসরণ করছেন– বিরোধী মত দমন করে।
সংস্থাটি জানায়, ‘ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সংস্কার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জবাবদিহি নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়ার বদলে সরকার এখন ক্ষমতা ব্যবহার করছে হাসিনা-সমর্থকদের মৌলিক অধিকার রোধে।’
বিশেষ করে ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সংযোজিত কঠোর সংশোধনী’ ব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে দমন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে এইচআরডব্লিউ।
১২ মে আওয়ামী লীগকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর আগে ড. ইউনূসের বাসভবনের সামনে লাগাতার বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ঢাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
সংস্থাটির এশিয়াবিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক মতকে সমর্থনমূলক বক্তব্য বা কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা একটি চরম মাত্রার মৌলিক অধিকার হরণ। এটি আগের সরকারের দমননীতিরই প্রতিফলন।’
তিনি আরও বলেন,‘হাসিনা সরকার আইনের অপব্যবহার করে বিরোধীদের স্তব্ধ করেছিল। এখন সেই একই পদ্ধতি আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উপর প্রয়োগ করাও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে মানবাধিকারের ভবিষ্যৎ এবং রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।